প্রশ্ন
১। জীবের গঠনের এককগুলোকে কী বলে?
উত্তর: কোষ।
প্রশ্ন
২। একটি কোষ নিয়ে গঠিত জীবকে কী বলে?
উত্তর: এককোষী জীব।
প্রশ্ন
৩। ব্যাকটেরিয়া কী ধরনের জীব?
উত্তর: এককোষী জীব।
প্রশ্ন
৪। এককোষী জীবের উদাহরণ কোনটি?
উত্তর: প্রোটোজোয়া।
প্রশ্ন
৫। সরলতম জীব বলা হয় কাকে?
উত্তর: এককোষী জীবকে।
প্রশ্ন
৬। কোষের নির্দিষ্ট কী নেই?
উত্তর : আকৃতি।
প্রশ্ন
৭। আমরা প্রত্যেকেই কয়টি কোষ থেকে জীবন শুরু করেছি?
উত্তর: একটি।
প্রশ্ন
৮। মাছ, গাছ, মানুষ এগুলো কী ধরনের জীব?
উত্তর: বহুকোষী
জীব।
প্রশ্ন
৯। বহুকোষী জীব কয়টি কোষ থেকে তৈরি হয়?
উত্তর: একটি কোষ।
প্রশ্ন
১০। বহুকোষী জীবদেহের দেহকোষ যে প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয় তাকে বলে?
উত্তর: মাইটোসিস।
প্রশ্ন
১১। যৌন জননকারী জীবের জনন মাতৃকোষ যে প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয় তাকে বলে?
উত্তর: মিয়োসিস।
প্রশ্ন
১২। কোষের বিভাজনরত অবস্থাকে বলে?
উত্তর: মাইটোসিস
পর্যায়।
প্রশ্ন
১৩। কোষের বিভাজনের পূর্ববর্তী প্রস্তুতি অবস্থাকে বলে?
উত্তর:
ইন্টারফেজ পর্যায়।
প্রশ্ন
১৪। ইন্টারফেজ পর্যায় কয়টি পর্যায়ে বিভক্ত?
উত্তর: ৩টি।
প্রশ্ন
১৫। কোষচক্রের প্রায় 90-95%
সময় ব্যয় হয়-
উত্তর: ইন্টারফেজ
পর্যায়ে।
প্রশ্ন
১৬। কোষচক্রের প্রায় 5-10% সময়
ব্যয় হয়-
উত্তর: মাইটোসিস
পর্যায়ে।
প্রশ্ন
১৭। কোষচক্রের S পর্যায়ের নাম কী?
উত্তর: প্রতিলিপন
পর্যায়।
প্রশ্ন
১৮। ডিএনএ প্রতিলিপনে কোনো ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে-
উত্তর: G2 পর্যায়ে।
প্রশ্ন
১৯। মাইটোসিসের মাধ্যমে সৃষ্ট অপত্য কোষের সংখ্যা কত?
উত্তর: ২টি।
প্রশ্ন
২০। সব বহুকোষী জীব কোন কোষ থেকে জীবন শুরু করে?
উত্তর: জাইগোট।
প্রশ্ন
২১। মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস কতবার বিভক্ত হয়?
উত্তর: একবার।
প্রশ্ন
২২। দেহকোষ বিভাজিত হয় কোন প্রক্রিয়ায়?
উত্তর: মাইটোসিস।
প্রশ্ন
২৩। মাইটোসিসে নিউক্লিয়াসের বিভাজনের প্রথম ধাপ কোনটি?
উত্তর: প্রোফেজ।
প্রশ্ন
২৪। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের শেষ পর্যায় কোনটি?
উত্তর: টেলোফেজ।
প্রশ্ন
২৫। প্রোফেজ মাইটোসিসের কততম পর্যায়?
উত্তর: ১ম।
প্রশ্ন
২৬। কোনটিকে ইকুয়েশনাল বিভাজন বলে?
উত্তর: মাইটোসিস।
প্রশ্ন
২৭। মাতৃকোষটি দুভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি নতুন অপত্য কোষে পরিণত হয় কোন ধাপে?
উত্তর: টেলোফেজ।
প্রশ্ন
২৮। কোন পর্যায়ে তন্তুগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়?
উত্তর: টেলোফেজ।
প্রশ্ন
২৯। মাইটোসিসের কোন পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো সবচেয়ে খাটো ও মোটা দেখায়?
উত্তর: মেটাফেজ।
প্রশ্ন
৩০। টিউমার ও ক্যান্সার সৃষ্টি হয় কোন কোষ বিভাজনের ফলে?
উত্তর: অনিয়ন্ত্রিত
মাইটোসিস।
প্রশ্ন
৩১। জীবদেহের ক্ষতস্থান পূরণ করতে ভূমিকা রাখে-
উত্তর: মাইটোসিস।
প্রশ্ন
৩২। কোন পদ্ধতিতে জনন মাতৃকোষের বিভাজন হয়?
উত্তর: মিয়োসিস।
প্রশ্ন
৩৩। মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় ক্রোমোজোম কতবার বিভক্ত হয়?
উত্তর: একবার।
প্রশ্ন
৩৪। মিয়োসিস কোষ বিভাজনে অপত্য কোষে ক্রোমোজোম
সংখ্যা
মাতৃকোষের-
উত্তর: অর্ধেক।
প্রশ্ন
৩৫। কোন কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে?
উত্তর: মিয়োসিস।
প্রশ্ন
৩৬। প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক থাকে কোন বিভাজনের মাধ্যমে?
উত্তর:
মিয়োসিস।
প্রশ্ন
৩৭। কোনটির ফলে মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জীবজগতে বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়?
উত্তর: জননকোষের
ক্রসিংওভার।
প্রশ্ন
৩৮। কোনটি জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বহন করে?
উত্তর: ক্রোমোজোম।
প্রশ্ন
৩৯। কোনটিকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
উত্তর: ক্রোমোজোম।
প্রশ্ন
৪০। Y ক্রোমোজোম X ক্রোমোজোমের তুলনায়-
উত্তর: ক্ষুদ্র।
সংক্ষেপে উত্তর
দাও।
প্রশ্ন
১। কোষ বিভাজন কী?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায়
একটি মাতৃ কোষ হতে একাধিক অপত্য কোষ উৎপন্ন হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে।
প্রশ্ন
২। এককোষী জীব কাকে বলে?
উত্তর: যেসব জীবের
দেহ একটি কোষ দিয়ে তৈরি তাদের এককোষী জীব বলে। যেমন- ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি।
প্রশ্ন
৩। বহুকোষী জীব কাকে বলে?
উত্তর: যেসব জীবের
দেহ বহু সংখ্যক কোষ দ্বারা গঠিত তাদের বহুকোষী জীব বলে। যেমন- গাছ, মানুষ প্রভৃতি।
প্রশ্ন
৪। জাইগোট কী?
উত্তর: যৌন জননের
সময় পুরুষ ও স্ত্রী জনন কোষের মিলনে তৈরি কোষকেই জাইগোট বলে।
প্রশ্ন
৫। দেহ কোষ কী?
উত্তর: দেহ কোষ
হলো এমন এক ধরনের জৈবিক কোষ যা কোনো জীবের দেহ গঠন করে।
প্রশ্ন
৬। মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
উত্তর: যে কোষ বিভাজন
প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃ কোষের নিউক্লিয়াস প্রথমে এবং সাইটোপ্লাজম পরে একবার করে বিভক্ত
হয়ে ২টি অপত্য কোষ উৎপন্ন হয় যেখানে প্রতিটি নতুন সৃষ্ট কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা, গঠন
ও গুণাগুণ হুবহু মাতৃকোষের অনুরূপ হয় তাকে মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
প্রশ্ন
৭। মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
উত্তর: যে কোষ বিভাজন
প্রক্রিয়ায় একটি জনন মাতৃ কোষের নিউক্লিয়াস পর পর দুই বার কিন্তু ক্রোমোজোম কেবল এক
বার বিভক্ত হয় চারটি অপত্য কোষ উৎপন্ন করে যেখানে প্রতিটি নতুন সৃষ্ট কোষের ক্রোমোজোম
সংখ্যা মাতৃ কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয় তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলে।
প্রশ্ন
৮। অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন কী?
উত্তর: মাইটোসিস
কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটির কোনো কারণে নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে অস্বাভাবিকভাবে কোষ বিভাজন
চলতে থাকে, একেই বলা হয় অস্বাভাবিক বা অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন।
প্রশ্ন
৯। ইন্টারফেজ কী?
উত্তর: কোষ বিভাজনের
শুরুতে বা একটি কোষের পরপর দু'বার বিভাজনের মধ্যবর্তী যে দশায় নিউক্লিয়াস প্রস্তুতিমূলক
কার্যসম্পন্ন করে তাই ইন্টারফেজ।
প্রশ্ন
১০। সাইটোকাইনেসিস কী?
উত্তর: মাইটোসিস
কোষ বিভাজনের সময় সাইটোপ্লাজমের বিভাজনই সাইটোকাইনোসিস।
প্রশ্ন
১১। মানুষের প্রতিটি দেহকোষে কয়টি ক্রোমোজোম রয়েছে?
উত্তর: মানুষের
প্রতিটি দেহকোষে মোট ২৩ জোড়া অর্থাৎ ৪৬টি ক্রোমোজোম রয়েছে।
প্রশ্ন
১২। অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
উত্তর: যে কোষ বিভাজন
প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম কোনো জটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই
সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
প্রশ্ন
১৩। মাইটোসিসের কোন পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো সর্বাধিক মোটা ও খাটো হয়?
উত্তর: মাইটোসিসের
মেটাফেজ পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো সর্বাধিক মোটা ও খাটো হয়।
প্রশ্ন
১৪। স্পিন্ডল তন্তু কী?
উত্তর: স্পিন্ডল
যন্ত্রের প্রতিটি তন্ত্রকে স্পিন্ডল তন্তু 'বলে।
প্রশ্ন
১৫। কোন বিভাজন প্রক্রিয়ায় জনন কোষ উৎপন্ন হয়?
উত্তর: মিয়োসিস
কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায জনন কোষ উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন
১৬। ডিপ্লয়েড কী?
উত্তর: যদি জীবকোষে
প্রত্যেকটি ক্রোমোজোম দুটি করে তথা জোড়ায় জোড়ায় থাকে তবে তাকে ডিপ্লয়েড বলে।
প্রশ্ন
১৭। মাতৃকোষ কী?
উত্তর: যে কোষ থেকে
কোষ বিভাজন শুরু হয় তাকে মাতৃকোষ বলে।
প্রশ্ন
১৮। কোষচক্র কাকে বলে?
উত্তর: যে চক্রের
মাধ্যমে একটি মাতৃকোষ সৃষ্টি, এর বৃদ্ধি এবং পরবর্তী সময়ে বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোষের
সৃষ্টি হয়
তাকে কোষচক্র বলে।
প্রশ্ন
১৯। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ধাপগুলো লেখ।
উত্তর: মাইটোসিস
কোষ বিভাজনের ধাপ গুলো হলো- প্রোফেজ, মেটাফেজ, এনাফেজ, টেলোফেজ এবং সাইটোকাইনেসিস।
প্রশ্ন
২০। উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকে কোন প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজিত হয়?
উত্তর: উদ্ভিদের
পরাগধানী ও ডিম্বকে মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজিত হয়।
ব্যাখ্যা
ও বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন
১। অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কীভাবে সংঘটিত হয়?
উত্তর: অ্যামাইটোসিস ধরনের
কোষ বিভাজনে মাতৃ কোষটি পিরিপক্ক হলে প্রথমে নিউৃক্লিয়াসের ভেতর ক্রোমোজমের ডিএরএ’র
প্রতিলিপন হয়। কোষের নিউক্লিয়াসটির আকৃতি পরিবর্তন হয়ে ডাম্বেলের আকৃতি ধারণ করে এবং
প্রায় মাঝ বরাবর সংকুচিত হতে শুরু করে। সংকোচন শেষে মাতৃকোষের মূল দীর্ঘাকৃতির নিউক্লিয়াসটি
পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়ায় বিভাজিত
দুইটি নিউক্লিয়াসে ডিনএনএ সুনির্দিষ্ট এবং সমানভাবে বিভক্ত হওয়া পুরোপুটি নিশ্চিত নয়,
কাজেই দুটি ভিন্ন হতে পারে। নিউক্লিয়াসের সঙ্গে সঙ্গে সাইটোপ্লাজমও মাঝ বরাবর সংকুটিত
হতে হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি কোষে পরিণত হয়। এ ধরনের বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ তৈরি
করে, তাই একে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজনও বলা হয়ে থাকে।
প্রশ্ন
২। ইন্টারফেজ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজন
একটি অবিচ্ছিন্ন বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এ বিভাজনে প্রথমে ক্যারিওকাইনেসিস এবং পরবর্তীতে
সাইটোকাইনেসিস বিভাজন ঘটে। বিভাজন শুরুর পূর্বে কোষের নিউক্লিয়াসে কিছু প্রস্তুতিমূলক
কাজ হয়। এ অবস্থাকে ইন্টারফেজ পর্যায় বলে।
প্রশ্ন
৩। কোন পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো মেরুপ্রান্তে অবস্থান নেয় এবং এর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়?
উত্তর: মাইটোসিস
কোষ বিভাজনের অ্যানাফেজ পর্যায়ের শেষের দিকে অপত্য ক্রোমোজোমগুলো স্পিন্ডলযন্ত্রের
মেরুপ্রান্তে অবস্থান নেয় এবং ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
প্রশ্ন
৪। সাইটোকাইনেসিস বলতে কী বুঝ?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায়
বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দু ভাগে বিভক্ত হয় তাকে সাইটোকাইনেসিস বলে। এ পর্যায়ে নিউক্লিয়াসের
বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে কোষের মধ্যবর্তী অংশে নিউক্লিয়ার মেমব্রেনের উভয় পাশ থেকে দুটি
খাঁজ সৃষ্টি হয়। এ খাঁজ ক্রমান্বয়ে গভীর হয়ে মিলিত হয়ে দুটি কোষে বিভক্ত হয়। সাইটোপ্লাজমিক
অঙ্গাণুসমূহের সমবর্তন ঘটার ফলে দুটি পরিপূর্ণ অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন
৫। ক্যান্সার কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মাইটোসিস
কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
কোনো কারণে এ নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে কোষ বিভাজন বিরামহীনভাবে চলতে থাকে। ফলে টিউমার
তৈরি হয় যা পরে ক্যান্সারে রূপ নেয়।
প্রশ্ন
৬। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে কীভাবে ক্রোমোজোমের সমতা রক্ষা হয়?
উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজন
প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস দুবার কিন্তু ক্রোমোজোম একবার বিভাজিত হয়, ফলে সৃষ্ট অপত্য কোষের
ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক হয়। মিয়োসিস বিভাজন প্রক্রিয়া ডিপ্লয়েড জীবের মাতৃজনন
কোষে হয়। ফলে ক্রোমোজোম সংখ্যা হ্রাস পেয়ে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট সৃষ্টি হয়। ফলে যখন দুটি
হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট মিলে ডিপ্লয়েড জাইগোট সৃষ্টি হয় তখন নতুন জীবটি মাতৃ জীবের মত ক্রোমোজেম
বিশিষ্ট হয়। আবার হ্যাপ্লয়েড উদ্ভিদের জাইগোটে মিয়োসিস হয় ফলে হ্যাপ্লয়েড অপত্য জীবের
সৃষ্টি হয়। এভাবেই মিয়োসিসের মাধ্যমে কোনো জীবের জীবনচক্রে ক্রোমোজোম সংখ্যার সমতা
রক্ষা হয়।
প্রশ্ন
৭। জিন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: জিন হলো ক্রোমোজোমে
অবস্থিত ডিএনএ এর অংশ বিশেষ যা কোনো জীব দেহের একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য
দায়ী। ডিএনএ অণু জিনের রাসায়নিক রূপ। যেসব জীবে ডিএনএ থাকে না কেবল আরএনএ থাকে, সেক্ষেত্রে
আরএনএ জিন হিসেবে কাজ করে। মানুষের চোখের রং, চুলের প্রকৃতি, চামড়ার রং ইত্যাদি সবই
জিন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। ক্রোমোজোম জিনকে এক বংশ থেকে পরবর্তী বংশে বহন করার জন্য বাহক
হিসেবে কাজ করে বংশগতির ধারা অক্ষুণ্ণ রাখে।
প্রশ্ন
৮। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজনের
প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ:
১. মিয়োসিস পদ্ধতিতে
জননকোষ সৃষ্টি হয়।
২. ক্রোমোজোম সংখ্যা
ধ্রুব রাখতে মিয়োসিস হয়।
৩. প্রজাতির স্বকীয়তা
ও বৈচিত্র্য সৃষ্টির জন্য মিয়োসিস হয়।
৪. মিয়োসিস আনে
বৈচিত্র্য, বৈচিত্র্য আনে অভিব্যক্তির ধারা।
প্রশ্ন
৯। উদ্ভিদের বৃদ্ধি মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলেই হয়। বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর
নিষিক্ত ডিম্বাণু বা জাইগোট মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে ভূণ গঠন করে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে
শিশু উদ্ভিদ বা চারাগাছ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়।' উদ্ভিদের এই
বৃদ্ধি মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলেই হয়।
প্রশ্ন
১০। মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব নিয়ে দেওয়া হলো: ডিপ্লয়েড জীবে মিয়োসিসের ফলে গ্যামেট বা জনন কোষ তৈরি হয়। যৌন প্রক্রিয়ায় জননকোষের মিলনের মাধ্যমেই বংশবিস্তার হয় বলে মিয়োসিস কোষ বিভাজন ব্যতীত জীবের বংশ বৃদ্ধি সম্ভব নয়। মিয়োসিস কোষ বিভাজনে জননকোষের ক্রসিং ওভারের ফলে জীবজগতের বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়। এ জন্য মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রশ্ন
১১। প্রজাতির স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় চিত্র 'P' প্রক্রিয়াটির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: চিত্র 'P' মিয়োসিস কোষ বিভাজনের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রজাতির স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব নিম্নে বিশ্লেষণ করা হলো-
উচ্চ শ্রেণির জীবে
মিয়োসিসের ফলে একটি জনন মাতৃকোষ হতে চারটি জনন কোষের সৃষ্টি হয় এবং প্রত্যেক মাতৃকোষের
ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক ক্রোমোজোম থাকে। ডিপ্লয়েড জীবে গ্যামেট সৃষ্টিকালে জনন মাতৃকোষে
এবং হ্যাপ্লয়েড জীবের জাইগোটে মিয়োসিস কোষ বিভাজন হয় বলেই প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায়
টিকে থাকে এবং প্রজাতির স্বাতন্ত্র্য রক্ষিত হয়।
প্রশ্ন
১২। নিচের চিত্রটি লক্ষ কর:
(ক) জীবের সঙ্গে উদ্দীপকের ছক 'A' কীভাবে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর।
(খ)
ছক 'B' এর কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর:
(ক) উদ্দীপকের ছক
'A' হলো মিয়োসিস কোষ বিভাজন। মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চশ্রেণির জীবের
জনন মাতৃকোষ থেকে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট এবং নিম্ন শ্রেণির জীবের ডিপ্লয়েড জাইগোট থেকে
হ্যাপ্লয়েড উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়। ফলে বংশপরম্পরায় প্রজাতিক বৈশিষ্ট্য অটুট থাকে। আর এভাবে
মিয়োসিস ঘটে বলেই প্রতিটি জীবের বৈশিষ্ট্য
বংশপরম্পরায় টিকে
থাকতে পারে।
(খ) ছক 'B' হলো
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন। নিম্নে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ব্যাখ্যা
করা হলো-
এককোষী আদিকোষী
জীবগুলো সরাসরি বিভাজনের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে থাকে, এই প্রক্রিয়াটি অ্যামাইটোসিস
বা বাইনারি ফিশান নামে পরিচিত। অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সাধারণত ব্যাকটেরিয়া,
ঈষ্ট প্রভৃতি এককোষী প্রোক্যারিওটিক জীবে ঘটে। যদি অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় এসব জীবের
বংশগতির ধারা বজায় না থাকত তবে বাস্তুসংস্থানে শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ প্রক্রিয়াটি চালু
থাকত না। এককোষী জীবের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য এ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কার্যকর, বিভাজনের
জন্য কোষের বিশেষ কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না এবং এই পদ্ধতিতে দ্রুত কোষের সংখ্যা
বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন
১৩। নিমসার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবোধ স্যার তার শিক্ষার্থীদের বললেন সাধারণত উচ্চ
শ্রেণির জীবের দেহকোষে এক ধরনের কোষ বিভাজন হয়। উক্ত কোষ বিভাজনের একটি ধাপে সেন্ট্রোমিয়ার
দুটি খন্ডে বিভক্ত হয়। ফলশ্রুতিতে একটি ক্রোমোসোম থেকে দুটি অপত্য ক্রোমোসোম সৃষ্টি
হয়।
(ক)
উদ্দীপকে উল্লিখিত সুবোধ স্যারের ধাপটির বর্ণনা দাও।
(খ)
উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে না ঘটলে জীবদেহে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে বিশ্লেষণ
কর।
উত্তর:
(ক) উদ্দীপকে বর্ণিত
কোষ বিভাজন পর্যায়টি মূলত মাইটোসিস কোষ বিভাজনের অ্যানাফেজ পর্যায়কে নির্দেশ করে। নিচে
উক্ত পর্যায়ের বর্ণনা দেওয়া হলো-
অ্যানাফেজ: কোষ বিভাজনের এ
পর্যায়ে প্রতিটি ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিভক্ত হওয়ার ফলে ক্রোমোটিড দুটি আলাদা
হয়ে পড়ে। ক্রোমাটিড দুইটিকে অপত্য ক্রোমোজোম বলে এবং দুটিতেই একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার
সংযুক্ত থাকে। অপত্য ক্রোমোজোম দুটি কোষের মধ্যবর্তী বা বিষুবীয় অঞ্চল থেকে বিপরীত
মেরুর দিকে যেতে থাকে। মেরুর দিকে যাওয়ার সময় অপত্য ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার অগ্রগামী
থাকে এবং ক্রোমাটিড বাহুগুলো তাদের পেছন দিকে থাকে। এ পর্যায়ে স্পিন্ডল তন্তু প্রায়
বিলুপ্ত হয়ে যায়। অপত্য ক্রোমোজোমগুলো মেরুর কাছাকাছি পৌছালেই এ পর্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।
(খ) উদ্দীপকে বর্ণিত বিভাজন প্রক্রিয়া তথা মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না ঘটলে জীবদেহে যে ধরনের সমস্যা হতে পারে তা নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষ সংখ্যা বাড়তে থাকে। এভাবে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রিতভাবে চলতে থাকে। কিন্তু কোনো কারণে এ বিভাজন প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে গেলে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন চলতে থাকে। ফলে অস্বাভাবিক ও অনভিপ্রেত বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। এরূপ বিভাজনের ফলে টিউমার কোষ সৃষ্টি হয়। আর ক্যান্সার হলো জীবনের শেষ পরিণতি। যা মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যু মুখে ঠেলে দেয়। যদি উদ্দীপকে উল্লিখিত কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া অস্বাভাবিক হয় তাহলে মানবজাতির জন্য অত্যধিক বিপজ্জনক হবে।
প্রশ্ন
১৪। সানজিদা তার বান্ধবী মাহিকে বলল, মাইটোসিস কোষ বিভাজনের একটি ধাপে ক্রোমোজোমগুলো
সর্বাধিক মোটা ও খাটো হয়। সানজিদা তার বান্ধবীকে কোষ বিভাজনের কোন ধাপটি সম্পর্কে অবগত
করেছে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সানজিদা তার বান্ধবী
মাহিকে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মেটাফেজ ধাপ সম্পর্কে অবগত করেছে। নিম্নে এই ধাপটি সম্পর্কে
ব্যাখ্যা দেওয়া হলো-
মেটাফেজ: এ পর্যায়ে নিউক্লিয়াসের
অভ্যন্তরে নির্মিত দুই মেরুবিশিষ্ট তত্ত্বযুক্ত স্পিন্ডল যন্ত্রের ঠিক মাঝামাঝি জায়গায়
(বিষুবীয় অঞ্চলে) ক্রোমোজোমগুলো বিন্যস্ত হয়। প্রতিটি 'ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিষুবীয়
অঞ্চলে এবং ক্রোমোটিভ বাহু দুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে। এ পর্যায়েই ক্রোমোজোমগুলোকে
সবচেয়ে খাটো ও মোটা দেখায়। এ পর্যায়ের শেষদিকে সেন্ট্রোমিয়ারের বিভাজন ঘটে দুটি অপত্য
সেন্ট্রোমিয়ার সৃষ্টি হয়। এবং নিউক্লিয়ার মেমেব্রেন সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
প্রশ্ন
১৫। উদ্দীপকের P ও S এর মধ্যে ৩টি বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: উদ্দীপকে উল্লিখিত
P হচ্ছে প্রোফেজ এবং S হচ্ছে টেলোফেজ পর্যায়। এদের মধ্যে ৩টি বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ করা
হলো-
১. প্রোফেজ মাইটোসিসের
প্রথম পর্যায়, কিন্তু টেলোফেজ মাইটোসিসের শেষ পর্যায়।
২. প্রোফেজে পানি
হ্রাস পেতে থাকে, অপরদিকে টেলোফেজ পর্যায়ে পানি যোজন ঘটে।
৩. প্রোফেজে ক্রোমোজোমগুলো
সংকুচিত হয়ে মোটা ও খাটো হয়, অন্যদিকে টেলোফেজে ক্রোমোজোমগুলো সরু ও লম্বা আকার ধারণ
করে।
প্রশ্ন ১৬। প্রোফেজ→B→C→ টেলোফেজ
উদ্দীপকের
B ও C এর নাম উল্লেখপূর্বক চিত্রের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর: উদ্দীপকের মাইটোসিস
কোষ বিভাজনের পর্যায়গুলো দেখানো হয়েছে। এখানে B ও C যথাক্রমে মেটাফেজ ও অ্যানাফেজ পর্যায়।
নিচে এ পর্যায় দুটি চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো।
প্রশ্ন ১৭। জীবের ভারসাম্য রক্ষায় মিয়োসিস এর প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: জীবদেহের ভারসাম্য
রক্ষায় মিয়োসিসের প্রয়োজনীয়তা
নিম্নে বিশ্লেষণ
করা হলো-
• মিয়োসিস পদ্ধতিতে
জননকোষ সৃষ্টি হয়।
• ক্রোমোজোম সংখ্যা
ধ্রুব রাখতে মিয়োসিস হয়।
• প্রজাতির স্বকীয়তা
ও বৈচিত্র্য সৃষ্টির জন্য মিয়োসিস হয়।
• মিয়োসিস আনে বৈচিত্র্য,
বৈচিত্র্য আনে অভিব্যক্তির ধারা।
অতএব, জীবদেহের
ভারসাম্য রক্ষায় মিয়োসিস এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
প্রশ্ন
১৮। জীববিজ্ঞানের শিক্ষক নাহিদ, তার শিক্ষার্থীদেরকে বললো, মাতাপিতা থেকে জীবের বৈশিষ্ট্য
নিয়ন্ত্রণকারী জিন সন্তানসন্ততিতে
বহন করে নিয়ে যায় একটি উপাদান, যাকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষক
নাহিদ কোন উপাদানটিকে নিয়ে আলোচনা করলেন, যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: শিক্ষক নাহিদ তার
শিক্ষার্থীদের সাথে ক্রোমোজোম নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। যা বংশগতির প্রধান উপাদান। এটি
নিউক্লিয়াসের নিউক্লিওপ্লাজমে বিস্তৃত এবং সূত্রাকার ক্রোমাটিন দ্বারা গঠিত। ডিপ্লয়েড
হচ্ছে দুই সেট ক্রোমোজোম, যার একসেট (XY) পিতা থেকে আসে এবং অপর সেট (XX) মাতা থেকে
আসে। একটি ক্রোমোজোমের কাজ হলো মাতাপিতা থেকে জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিন সন্তান
সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। মানুষের চোখের রং, চুলের প্রকৃতি, চামড়ার গঠন ইত্যাদি
বৈশিষ্ট্য ক্রোমোজোম কর্তৃক বাহিত হয়ে বংশগতির ধারা অক্ষুণ্ণ রাখে। বিশেষ করে জীবের
লিঙ্গ নির্ধারণে ক্রোমোজোমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌতভিত্তি
বলে আখ্যায়িত করা হয়।
চিন্তন
দক্ষতাভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন
১। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকারিয়া তার বড় ভাই জারিফকে বললো: ভাইয়া, অ্যামিবা, ব্যাকটেরিয়া
কিংবা নীলাভ সবুজ শৈবাল জাতীয় জীবে এক ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায়। জাকারিয়ার বর্ণনাকৃত
কোষ বিভাজনটি কোন ধরনের ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: জাকারিয়া বর্ণনাকৃত
কোষ বিভাজনটি এককোষী জীবদেহের কোষ বিভাজন যা অ্যামাইটোসিস পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। এককোষী
আদিকোষী জীবগুলো সরাসরি বিভাজনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে থাকে, তাই প্রক্রিয়াটি অ্যামাইটোসিস
বা বাইনারি ফিশান নামে পরিচিত। এককোষী জীব (অ্যামিবা, ব্যাকটেরিয়া কিংবা নীলাভ সবুজ
শৈবাল) এর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কার্যকর, বিভাজনের জন্য কোষের
বিশেষ কোনো প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় না এবং এই পদ্ধতিতে দ্রুত কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন
২। অ্যামাইটোসিস ও মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মধ্যে ৫টি পার্থক্য লিখ।
উত্তর: অ্যামাইটোসিস ও
মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার মধ্যে ৫টি পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলো:
অ্যামাইটোসিস |
মাইটোসিস |
১. জটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই
অ্যামাইটোসিস ঘটে। |
১. জটিল
ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাইটোসিস ঘটে। |
২.
নিউক্লিয়ার মেমব্রেনের অবলুপ্তি ঘটে না। |
২
নিউক্লিয়ার মেমেব্রেনের অবলুপ্তি ঘটে। |
৩.
মাকুযন্ত্রের আবির্ভাব ঘটে না। |
৩.
মাকুযন্ত্রের আবির্ভাব ঘটে। |
৪.
অ্যামাইটোসিসকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে। |
৪.
মাইটোসিসকে সমীকরণিক বিভাজন বলে। |
৫. এ প্রক্রিয়ায়
কোষের নিউক্লিয়াস ধীরে ধীরে লম্বা হয় এবং ক্রমান্বয়ে ডাম্বেল আকার ধারণ করে। |
৫. নিউক্লিয়াস ডাম্বেল
আকৃতির গঠন তৈরি করে না। |
প্রশ্ন
৩। আলিফা তার বোন আরিশাকে কোষচক্রের ২টি ধাপ সম্পর্কে বর্ণনা দেয়। আলিফা বর্ণনা দিতে
গিয়ে বলে, একটি পর্যায়ে 90-95% সময় ব্যয় হয় অন্যটিতে 5-10% সময় ব্যয় হয়। দুটি পর্যায়
কী কী এবং এদের সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দাও।
উত্তর: 90-95% সময়ে যে
পর্যায়ে ব্যয় হয় সেটি ইন্টারফেজ পর্যায় এবং 5-10% সময় যে পর্যায়ে ব্যয় হয় সেটি মাইটোসিস
পর্যায়। সাধারণত, বিভাজনরত অবস্থাকে বলা হয় মাইটোসিস পর্যায় এবং বিভাজনের পূর্ববর্তী
অবস্থাকে বলা হয় ইন্টারফেজ পর্যায়। ইন্টারফেজ পর্যায় GI (Gap 1), S(synthesis) এবং
G2 (Gap 2) এই তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত। একটি কোষ বিভাজনের পর পরের কোষ বিভাজনের চক্রটি
শুরু করার জন্য G। হচ্ছে প্রথম পর্যায়। পরবর্তী ১ পর্যায় হচ্ছে প্রতিলিপন পর্যায়, এই
পর্যায়ে ডিএনএ প্রতিলিপন হয়ে প্রতিটি ক্রোমোসোমের একটি অবিকল প্রতিলিপি তৈরি হয়।
G2 হচ্ছে শেষ পর্যায়, যা ডিএনএ প্রতিলিপনে কোনো ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে।
প্রশ্ন
৪। A ও B এর মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উত্তর:
মাইটোসিস বিভাজন |
মিয়োসিস বিভাজন |
১.
সাধারণত জীবের দৈহিক কোষে হয়ে থাকে। |
১.
সাধারণত জীবের জনন কোষে হয়ে থাকে। |
২.
নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয়। |
২.
নিউক্লিয়াস দুবার এবং ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয়। |
৩. অপত্য কোষের
ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের সমান থাকে। |
৩. অপত্য কোধে::
ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের অর্ধেক থাকে। |
৪.
সাধারণত ক্রসিং ওভার হয় না। |
৪.
সাধারণত ক্রসিং ওভার হয়। |
প্রশ্ন
৫। চিত্র 'ক'-এর বিভাজনের নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়ে গেলে কী ঘটে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: চিত্র 'ক' হচ্ছে
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের। মাইটোসিস কোষ বিভাজন সুনিয়ন্ত্রিত ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এ
কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুটি, দুটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
কিন্তু কোনো কারণে এ বিভাজন প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে গেলে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন চলতে থাকে।
এরূপ অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফলে টিউমার কোষ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন
৬। মাইটোসিস কোষ বিভাজনকে সমীকরণিক বিভাজন বলা হয় কেন?
উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনকে
সমীকরণিক বিভাজন বলে। কারণ মাইটোসিস এমন একটি কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি
প্রকৃত কোষ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে যেগুলোর ক্রোমোজোম
সংখ্যা, গঠন ও গুণাগুণ মাতৃকোষের মতো হয়। এ ধরনের কোষ বিভাজনের মাধ্যমে মাতৃকোষের ক্রোমোজোম'সংখ্যা
সৃষ্ট অপত্য কোষের সমান ও সমগুণসম্পন্ন হয়। এজনাই মাইটোসিস কোষ বিভাজনকে সমীকরণিক কোষ
বিভাজন বলে।
প্রশ্ন
৭। কোষ বিভাজন কেন হয়?
উত্তর: বিভাজনের মাধ্যমে
কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। জীবদেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণের জন্য কোষ বিভাজন
আবশ্যক। এছাড়াও জীবের প্রজনন ও প্রজাতির ধারা অক্ষুন্ন রাখতে কোষ বিভাজন হয়।
প্রশ্ন
৮। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রোফেজ ধাপে ক্রোমোজোম খাটো ও মোটা হয় কেন?
উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজনের
প্রোফেজ ধাপে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয় কিন্তু নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান ক্রোমোজোমগুলো
থেকে পানি হ্রাসের ফলে ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে খাটো ও মোটা হয়।
প্রশ্ন
৯। মিয়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?
উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজন
প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস দু'বার এবং ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয়। ফলে অপত্য কোষের ক্রোমোজোম
সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়। মিয়োসিস বিভাজনে ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক
হ্রাস পায় বলে মিয়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয়।
প্রশ্ন
১০। উদ্ভিদ জগতে মিয়োসিস কোথায় ঘটে?
উত্তর: মিয়োসিস সর্বদা
জনন মাতৃকোষে সম্পন্ন হয়। কখনও দৈহিক কোষে হয় না এবং সর্বদাই 2n সংখ্যক ক্রোমোজোম
বিশিষ্ট কোষে হয়। নিম্নশ্রেণির জীবে মিয়োসিস ঘটে জাইগোটে এবং উচ্চশ্রেণির জীবে মিয়োসিস
হয় নিষেকের পূর্বে জনন মাতৃকোষ হতে গ্যামেট সৃষ্টিকালে।
প্রশ্ন
১১। ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস পার্থক্যমন্ডিত কেন?
উত্তর: ক্যারিওকাইনেসিস
ও সাইটোকাইনেসিস পার্থক্যমন্ডিত। কারণ নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোপ্লাজমের
বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলে। আবার, ক্যারিওকাইনেসিস কতকগুলো নির্দিষ্ট পর্যায় অতিক্রমপূর্বক
ঘটে থাকে। অন্যদিকে সাইটোকাইনেসিস সরাসরি ঘটে থাকে।
প্রশ্ন
১২। ক্রোমোজোমকে কেন বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয়?
উত্তর: বংশগতির ধারা রক্ষা
করার মূল ভূমিকা পালন করে ক্রোমোজোমে থাকা মানবদেহের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ডিএনএ।
অর্থাৎ বংশগতির ধারা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য ডিএনএ-ই বংশগতির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে।
ক্রোমোজোমে অবস্থিত এই ডিএনএ মিয়োসিস কোষ বিভাজনের সময় সরাসরি পিতামাতা থেকে পরবর্তী
বংশধরে স্থানান্তরিত হয়। এ জন্য ক্রোমোজোমকে বংশগতির ভৌত ভিত্তি বলা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন