বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায়ের ক্লাস লেকচার

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তোমাদের সুবিধার জন্য রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায়ের ক্লাসলেকচার দেওয়া হলো। এখান থেকে এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞাগুলো তোমারা জানতে পারবে। তবে অধ্যায়টি ভালো ভাবে জানতে ও বুঝতে এই অধ্যায়ের যে ভিডিও ক্লাসগুলো দেওয়া হলো তা অবশ্যই ভালোভাবে দেখবে ও অনুশীলন করবে। তাহলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ভিতি তোমাদের আর থাকবেনা বলেই আমার বিশ্বাস। কারো কোনো সমস্যা থাকলে আমার জানাতে পারো।


মৌলিক পদার্থ:

যে সকল পদার্থকে রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে কেবল মাত্র একটি পদার্থই পাওয়া যায় তাদেরকে মৌলিক পদার্থ বলে। যেমন: অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, লোহা, সোনা ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত ১১৮ টি মৌল আবিস্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে ৯৮ টি প্রকৃতিতে পাওয়া যায় আর বাকিগুলো গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে তৈরী করা হয়েছে।

যৌগিক পদার্থ:

যে সকল পদার্থকে রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে একাধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়, তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলে। যেমন: পানি, মিথেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি।


প্রতীক:

কোনো মৌলের পুরো নামের সংক্ষিপ্ত রূপকে ঐ মৌলের প্রতীক বলে। প্রতীক দ্বারা মৌলিক পদার্থের একটি পরমাণুকে বোঝায়।

সংকেত:

মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের অণুর সংক্ষিপ্ত রূপকে ঐ পদার্থের সংকেত বলে।

যৌগমূলক:

একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত পরমাণু গুচ্ছ, যারা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অপরিবর্তিত থেকে একটিমাত্র পরমাণুর ন্যায় আচরণ করে, তাদেরকে যৌগমূলক বলে।

যোজনী:

কোনো মৌলিক পদার্থের একটি পরমাণু তার নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয়গ্যাসের ইলেকট্রন কাঠামো অর্জনের জন্য যতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা শেয়ার করে সেই সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজনী বলে।



রাসায়নিক বিক্রিয়া:

যে প্রক্রিয়ায় এক বা একধিক পদার্থ পরস্পরের সাথে যুক্ত বা বিযুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট নতুন এক বা একাধিক পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে।

রাসায়নিক সমীকরণ:

কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক দ্রব্য এবং উৎপন্ন দ্র্ব্যকে কতিপয় প্রতীক, সংকেত ও চিহ্নের মাধ্যমে সংক্ষেপে প্রকাশ করাকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে।

বিক্রিয়ক:

যে সকল পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাদের কে বিক্রিয়ক বলে।

উৎপাদ:

যে সকল পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয় তাদের কে উৎপাদ বলে।

সংযোজন বিক্রিয়া:

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ পরস্পর বিক্রিয়া করে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংযোজন বিক্রিয়া বলে। তবে যে সংযোজন বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ যুক্ত হয়ে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।



বিযোজন বিক্রিয়া:

যে বিক্রিয়ায় একটি যৌগ বিভক্ত হয়ে দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগে পরিণত হয় তাকে বিয়োজন বিক্রিয়া বলে। এটি সংযোজন বিক্রিয়ার বিপরীত বিক্রিয়া। তবে যে বিযোজন বিক্রিয়ায় একটি যৌগিক পদার্থ ভেঙে দুই বা ততোধিক মৌলে পরিণত হয় তাকে বিশ্লেষন বিক্রিয়া বলে।

প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া:

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি মৌল অন্য যৌগের অণুর এক বা একাধিক পরমাণুকে সরিয়ে নিজেই তার স্থান দখল করে নতুন যৌগ উৎপন্ন করে সে বিক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।

দ্বিবিযোজন বা বিনিময় বিক্রিয়া:

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় দুইটি ভিন্ন যৌগের অণুর মৌল বা মূলকগুলো স্থান অদল বদল বা বিনিময় করে একাধিক নতুন অণু গঠন করে তাকে বলা হয় পারস্পরিক দ্বিবিয়োজন বা বিনিময় বিক্রিয়া।

প্রশমন বিক্রিয়া:

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি এসিড ও একটি ক্ষারক পরস্পর বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে।

দহন বিক্রিয়া: যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বায়ু বা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে কোনো পদার্থে অগ্নিসংযোগ করলে তা ভিন্ন কোনো পদার্থে পরিণত হয় তাকে দহন বিক্রিয়া বলে।

কুইক লাইম:

ক্যালসিয়াম অক্সাইড কে কুইক লাইম বলে।

লাইম ওয়াটার:

কুইক লাইমের সম্পৃক্ত দ্রবণকে লাইম ওয়াটার বলে।

তড়িৎ বিশ্লেষ্য:

যে সকল পদার্থ শুষ্ক অবস্থায় তড়িৎপরিবহন না করলেও গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে ফলে তার ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তাদের কে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে।

তড়িৎ বিশ্লষণ:

কোনো গলিত বা দ্রবীভূত তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করে তার ভৌত বা রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটানোর প্রক্রিয়াকে তড়িৎবিশ্লেষণ বলে।

সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র

অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের চতুর্দশ অধ্যায় পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি নিম্নে দেওয়া হল। আশাকরি শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।

পরিবেশ:

আমাদের চারপাশের সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিবেশ। পরিবেশে স্বতন্ত্র ধরনের অজীব ও জীব উপাদান থাকে।

 

বাস্তুতন্ত্র:

যেকোনো একটি পরিবেশের অজীব এবং জীব উপাদানসমূহের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া, আদান-প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবেশে যে তন্ত্র গড়ে উঠে তাকে বাস্তুতন্ত্র বলে।

 

বাস্তুতন্ত্রের উপাদান:

বাস্তুতন্ত্র অজীব এবং জীব এই দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত।

 

অজীব উপাদান:

বাস্তুতন্ত্রের প্রাণহীন সব উপাদান অজীব উপাদান নামে পরিচিত। এই অজীব উপাদান আবার দুই ধরনের।

যথা:

(ক) অজৈব বা ভৌত উপাদান এবং

(খ) জৈব উপাদান।

অজীব উপাদানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার খনিজ লবণ, মাটি, আলো, পানি, বায়ু, তাপ, আর্দ্রতা ইত্যাদি। সকল জীবের মৃত ও গলিত দেহাবশেষ জৈব উপাদান নামে পরিচিত।

 

জীব উপাদান:

পরিবেশের সকল জীবন্ত অংশই বাস্তুতন্ত্রের জীব উপাদান। জীব উপাদানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।                     যথা:

(ক) উৎপাদক,

(খ) খাদক এবং

(গ) বিয়োজক।

 

(ক) উৎপাদক:

সবুজ উদ্ভিদ যারা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের খাদ্য নিজেরা তৈরি করতে পারে তারা উৎপাদক নামে পরিচিত।

(খ) খাদক বা ভক্ষক:

যে সকল প্রাণী উদ্ভিদ থেকে পাওয়া জৈব পদার্থ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে বা অন্য কোনো প্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে তারাই খাদক বা ভক্ষক নামে পরিচিত।

বাস্তুতন্ত্রে তিন ধরনের খাদক রয়েছে।

যেমন :

 i. প্রথম স্তরের খাদক,

ii. দ্বিতীয় স্তরের খাদক এবং

iii. তৃতীয় স্তরের খাদক বা সর্বোচ্চ খাদক

(গ) বিয়োজক:

এরা পচনকারী নামেও পরিচিত। পরিবেশে কিছু অণুজীব আছে, বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক যারা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহের উপর ক্রিয়া করে। এসময় মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। ফলে, মৃতদেহ ক্রমশ বিয়োজিত হয়ে নানা রকম জৈব ও অজৈব দ্রব্যাদিতে রূপান্তরিত হয়।

বাস্তুতন্ত্রের প্রকারভেদ:

প্রাকৃতিক পরিবেশে দু’ধরনের বাস্তুতন্ত্র রয়েছে। স্থলজ এবং জলজ বাস্তুতন্ত্র।

খাদ্য শৃঙ্খল:

উৎস থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে একে অন্যকে খাওয়ার মাধ্যমে শক্তির যে স্থানান্তর ঘটে তাই খাদ্যশৃঙ্খল।

যেমন: ঘাস à পতঙ্গ à ব্যাঙ à সাপ à ঈগল।

খাদ্যজাল:

বাস্তুতন্ত্রে অসংখ্য খাদ্যশৃঙ্খল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। খাদ্যশৃঙ্খলের এ ধরনের সংযুক্তিকে খাদ্যজাল বলা হয়।

 

বাস্তুতন্ত্রে শক্তি প্রবাহ:

সবুজ উদ্ভিদের মাধ্যমেই সূর্যশক্তি থেকে সৃষ্ট রাসায়নিক শক্তি বিভিন্ন প্রাণীতে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়। উৎপাদক থেকে আরম্ভ করে সর্বোচ্চ খাদক পর্যন্ত শক্তি রূপান্তরের সময় প্রতিটি ধাপে শক্তি হ্রাস পেতে থাকে। প্রতি স্তরে শক্তি হ্রাস পেলেও বিয়োজক যখন বিভিন্ন মৃত জীবে বর্জ্য পদার্থে বিক্রিয়া ঘটায় তখন অজৈব পুষ্টিদ্রব্য পরিবেশে মুক্ত হয়ে পুষ্টিভাণ্ডারে জমা হয়। এভাবে শক্তি প্রবাহ চলতে থাকে। এ শক্তিপ্রবাহ একমুখী ও পুষ্টিদ্রব্যের এই প্রবাহ চক্রাকারে চলে।

খাদ্য ও পুষ্টি

 খাদ্য:

আমরা যে সব বস্তু আহার করি তাকে আহার্য সামগ্রী বলে। কিন্তু সব আহার্য সামগ্রীই খাদ্য নয়। সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলা যাবে, যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

জীবদেহে শক্তির উৎস হল খাদ্য। সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াকালে সৌরশক্তি খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরুপে আবদ্ধ হয়। জীবকোষে শ্বসনের সময় স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি বা গতিশক্তি রুপে মুক্ত হয়, জীবদেহের যাবতীয় বিপাক ক্রিয়া, যেমন: শ্বসন, রেচন,পুষ্টি গ্রহণ ইত্যাদি এবং শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ, যেমন-বৃদ্ধি, চলন-গমন, জনন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং প্রাণ ধারনের জন্য প্রত্যেক জীবকেই খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তাই যদি প্রশ্ন আসে খাদ্য কাকে বলে? তার সংজ্ঞায় আমরা বলতে পারি-

“যে সব আহার্য সামগ্রী গ্রহণ করলে জীবদেহের বৃদ্ধি সাধন, পুষ্টি ও শক্তি উৎপাদন এবং ক্ষয়পূরন হয়, তাকেই খাদ্য বলে।”

পুষ্টি:

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় জীব তার দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন লাভের উদ্দেশ্যে পরিবেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে এবং তা পরিপাক, পরিশোষণ, পরিবহন, আত্তীকরণ ও শক্তিউৎপাদন করে থাকে তাকে পুষ্টি বলে।

পুষ্টিমান বা পুষ্টিমূল্য:

কোন খাদ্যে কী পরিমাণ ও কত রকম খাদ্য উপাদান থাকে তাকে ঐ খাদ্যের পুষ্টিমান বা পুষ্টিমূল্য বলে।

বিশুদ্ধ খাদ্য:

যে খাদ্যে শুধু একটি খাদ্য উপাদান থাকে, তাকে বিশুদ্ধ খাদ্য বলে। যেমন : চিনি, গ্লুকোজ। এতে শর্করা ছাড়া আর কোনো উপাদান থাকে না, তাই একে বিশুদ্ধ খাদ্য বলে।

মিশ্র খাদ্য:

যে খাদ্যে একের অধিক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। যেমন : দুধ, ডিম, খিচুরি, পেয়ারা ইত্যাদি।

খাদ্য উপাদান: 

উপাদান অনুযায়ী খাদ্যবস্তুকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা: ১. আমিষ, ২. শর্করা ও ৩. স্নেহ।

শর্করা:

শর্করা শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য। এটি কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এই তিনটি মৌলিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। শর্করা তিন প্রকার।

যথা:    ১. এক শর্করা বা মনোস্যাকরাইড,

২. দ্বি শর্করা বা ডাইস্যাকারাইড এবং

৩. বহু শর্করা বা পলি স্যাকারাইড 

শর্করা পরিপাকের পর সরল শর্করা তথা গ্লুকোজে পরিণত হয়। 

আমিষ বা প্রোটিন:

আমিষ হলো অ্যামাইনো এসিডের একটি জটিল যৌগ। এটি কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও সালফারের সমন্বয়ে গঠিত।

অ্যামাইনো এসিড: অ্যামাইনো এসিড দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ ও নাইট্রোজেনের সমতা রক্ষা করে। জীবদেহে প্রায় ২২টি অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায়।

সহজপাচ্যতার গুণক: আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করার পর এর শতকরা যত ভাগ অন্ত্র থেকে দেহে শোষিত হয় তত ভাগকে সেই আমিষের সহজপাচ্যতার গুণক ধরা হয়।

আমিষ পরিপাকের পর অ্যামাইনো এসিডে পরিণত হয়

স্নেহ পদার্থ:  স্নেহ পদার্থ ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলের সমন্বয়ে গঠিত হয়। স্নেহ পদার্থে ২০ প্রকার চর্বি জাতীয় এসিড পাওয়া যায়। চর্বি জাতীয় এসিড দুই প্রকার।

যথা:    ১. অসম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড এবং

২. সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় এসিড।

পরিপাকের পর স্নেহ পদার্থ ফ্যাটি এসিড ও গ্লিসারলে পরিণত হয়।

মৌলবিপাক:

বিপাক ক্রিয়া চালানোর জন্য যে শক্তি প্রয়োজন তাকে মৌলবিপাক বলে। 

খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন:

যেসব জৈব রাসায়নিক পদার্থ খাদ্যে সামান্য পরিমাণে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরোক্ষভাবে সাহায্য করে তাদের ভিটামিন বলে।

খনিজ লবণ: দেহকোষ ও দেহ তরলের জন্য খনিজ লবণ একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। প্রধানত দুই ভাবে খনিজ লবণ দেহে কাজ করে।

যথা:    ১. দেহের গাঠনিক উপাদানরূপে ও

২. দেহের অভ্যন্তরীণ কাজ নিয়ন্ত্রণে।

পানি:

প্রাণীদেহের ৬০ থেকে ৭০ ভাগই পানি। তাই দেহ গঠনে পানির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

শুষ্কতা:

কোনো কারণে দেহে পানির পরিমাণ কমে গেলে কোষগুলোতে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়। একে বলে শুষ্কতা।

রাফেজ বা আঁশযুক্ত খাদ্য:

শস্যদানা, ফলমূল, সবজির অপাচ্য অংশকে রাফেজ বলে। এটি কোনো পুষ্টি উপাদান নয়। তবে দেহের বর্জ্য পদার্থ নিস্কাশনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

পিটুইটারি গ্রন্থি কী? এ গ্রন্থিকে প্রভু গ্রন্থি বলা হয় কেন?

 পিটুইটারি গ্রন্থি: অগ্রমস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের নিচের অংশের কিছুটা সম্মুখে অবস্থিত মটর দানার ন্যায় ক্ষুদ্র গ্রন্থিকে পিটুইটারি গ্রন্থি বলে। এটি মানব দেহের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নালিবিহীন গ্রন্থি।



পিটুইটারি গ্রন্থি দেহের সবচেয়ে ছোট গ্রন্থি হলেও এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি। ছোট হলেও পিটুইটারি গ্রন্থিই সবচেয়ে বেশি হরমোন ক্ষরণ করে থাকে। এই গ্রন্থি থেকে গোনাডোট্রপিক, সোমাটোট্রপিক, থাইরয়েড উদ্দীপকে হরমোন, এডরেনোকর্টিকোট্রপিন ইত্যাদি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন সংখ্যায় যেমন বেশি, অপরদিকে পিটুইটারি গ্রন্থির হরমোন সরাসরি দৈহিক কাজ কম করলেও এই গ্রন্থির হরমোন  অন্যান্য গ্রন্থির ওপর প্রভাব বেশি। মূলত পিটুইটারি গ্রন্থিই অন্যন্য গ্রন্থির হরমোন ক্ষরণ ও কাজ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এজন্য পিটুইটারি গ্রন্থিকে প্রধান বা গ্রন্থি রাজ বা প্রভু গ্রন্থি বলা হয়।

সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩

উদ্ভিদের প্রজনন অধ্যায়ের ক্লাস লেকচার

প্রজনন: যে জটিল প্রক্রিয়ায় কোনো জীব তার অনুরূপ প্রতিকৃতি বা বংশধর সৃষ্টি করে তাকে প্রজনন বলে।

 

প্রজনন দুই প্রকার।

যথা-   ১. যৌন প্রজনন

২. অযৌন প্রজনন

 

১. যৌন প্রজনন: যে প্রজনন প্রক্রিয়া দুইটি ভিন্নধর্মী গ্যামেটের (পুং ও স্ত্রী) উৎপত্তি ও নিষেকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় তাকে যৌন প্রজনন বলে।

 

২. অযৌন প্রজনন: যে প্রজনন প্রক্রিয়া কোনো ধরণের গ্যামেটের উৎপত্তি বা নিষেক ছাড়াই সম্পন্ন হয় তাকে অযৌন প্রজনন বলে।

 

অযৌন প্রজনন দুই প্রকার:

১. স্পোর উৎপাদন

২. অঙ্গজ প্রজনন

 

স্পোর: বিভিন্ন অপুষ্পক উদ্ভিদ, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং প্রোটোজোয়া কর্তৃক সৃষ্ট, সাধারণত এক কোষী আনুবীক্ষনিক অযৌন জনন অঙ্গ যা অন্য কোনো জনন কোষের সাথে মিলিত না হয়েই নতুন বংশধর সৃষ্টি করতে সক্ষম, তাকে স্পোর বলে।

 

অঙ্গজ প্রজনন: কোনো ধরণের অযৌন রেণু বা জনন কোষ সৃষ্টি না করে দেহের অংশ খন্ডিত হয়ে বা কোনা প্রত্যঙ্গ রূপান্তরিত হয়ে যে প্রজনন ঘটে তাকে অঙ্গজ প্রজনন বলে।

 

অঙ্গজ প্রজনন দুই প্রকার:

১. প্রাকৃতিক অঙ্গজ প্রজনন: যে প্রজনন প্রক্রিয়া মানুষের কোনো রকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সম্পন্ন হয় তাকে প্রাকৃতিক অঙ্গজ প্রজনন বলে।

 

২. কৃত্রিম অঙ্গজ প্রজনন:  মানুষ তার সুবিধার জন্য কৃত্রিম উপায়ে জীবের যে অঙ্গজ প্রজনন ঘটায় তাকে কৃত্রিম অঙ্গজ প্রজনন বলে।

কৃত্রিম অঙ্গজ প্রজনন দুই প্রকার।

যথা-   ১.  কলম

২. কাটিং

 

প্রাকৃতিক অঙ্গজ প্রজনন চার প্রকার:

১. দেহের খন্ডায়ন: উদ্ভিদের দেহ কোনো কারণে খণ্ডিত হলে, প্রতিটি খন্ড একটি স্বাধীন উদ্ভিদ হিসেবে জীবন যাপন শুরু করলে তাকে দেহের খন্ডায়নের মাধ্যমে প্রজনন বলে। উদাহরণ: Nostoc, Spirogyra 

২. মূলের মাধ্যমে: কোনো উদ্ভিদের নতুন বংশধর মূল হতে সৃষ্টি হলে তাকে মূলের মাধ্যমে প্রজনন বলে। উদাহরণ: সেগুন, পটল, মিষ্টি আলু।

 

৩. রূপান্তরিত কান্ডর মাধ্যমে: খাদ্য সঞ্চয়, প্রতিরক্ষা, ভারসাম্যরক্ষা প্রভৃতি কারণে উদ্ভিদের কান্ড রূপান্তরিত হলে এবং তা থেকে নতুন বংশধর সৃষ্টি হলে তাকে রূপান্তরিত কান্ডের মাধ্যমে প্রজনন বলে।

 

৪. পাতার মাধ্যমে: কোনো কোনো উদ্ভিদের পাতা হতে নতুন বংশধর সৃষ্টি হয়। একে পাতার মাধ্যমে প্রজনন বলে। উদাহরণ: পাথর কুচি।

 

বিভিন্ন প্রকার রূপান্তরিত কান্ডের মাধ্যমে প্রজনন নিম্নে দেয়া হল:

 

১. টিউবার: উদাহরণ: আলু                            

২. রাইজোম: উদাহরণ: আদা

৩. কন্দ: উদাহরণ: পিঁয়াজ, রসুন                  

. স্টোলন: উদাহরণ: কচু, পুদিনা

৫. অফসেট: উদাহরণ: কচু, পুদিনা                

৬. পর্ণকান্ড: উদাহরণ: ফণিমনসা

৭. বুলবিল: উদাহরণ: চুপড়ি আলু

 

ফুল: উদ্ভিদের প্রজননের জন্য বিশেষায়িত রূপান্তরিত বিটপকে ফুল বলে।

 

একটি আদর্শ ফুলের পাঁচটি অংশ:

১. পুষ্পাক্ষ: ফুলের সবথেকে নিচের চওড়া স্তবক যার উপর ফুলের অন্যান্য স্তবক গুলো অবস্থান  করে তাকে পুষ্পাক্ষ বলে।

 

কাজ:

১. ফুলের অন্যান্য স্তবক গুলোকে ধারণ করা।

২. কান্ড বা বৃন্তের সাথে ফুলকে যুক্ত করা।

 

২. বৃতি: পুষ্পের সবচাইতে বাইরের বা নিচের দিকে অবস্থিত সবুজ এবং পাতার ন্যায় দেখতে স্তবকটিকে বৃতি বলে। বৃতির প্রতিটি অংশকে বৃত্যাংশ বলে। বৃত্যাংশগুলো যুক্ত থাকলে যুক্ত বৃতি আর যুক্ত না থাকলে বিযুক্ত বৃতি ফুল বলে।

 

কাজ:

১. মুকুল অবস্থায় পুষ্পের ভেতরের অংশগুলোকে বাইরের তাপ, শৈত বা বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে।

২. সবুজ বৃতি সালোক সংশ্লেষণে অংশগ্রহণ করে।

 

৩. দলমন্ডল: বৃতির ভেতরের দিকে অবস্থিত পুষ্পের দ্বিতীয় স্তবকটিকে দলমন্ডল বলে। দলমন্ডলের প্রতিটি অংশকে পাঁপড়ি বা দলাংশ বলে। প্রতিটি পাঁপড়ির উপরের দিকে চওড়া ও নিচের দিকে সরু হয়ে থাকে।

 

কাজ:

১. পুষ্পের অভ্যান্তরস্থ অঙ্গ গুলোকে রক্ষা করা।

২. গন্ধ ও রঙের সাহায্যে পতঙ্গকে আকৃষ্ট করে পরাগায়নে সাহায্য করা।

 

৪. পুং স্তবক: দলমন্ডলের ভেতরের দিকে অবস্থিত উপরের থলির ন্যায় অংশ ধারণকারী ফুলের চতুর্থ স্তবক কে পুং স্তবক বলে। পুংস্তবকের প্রতিটি অংশকে পুংকেশর বলে। প্রতিটি পুংকেশরের দুটি অংশ আেেছ, যথা-১. সরু সুতার ন্যায় দন্ড বা পুং দন্ড বা পরাগ দন্ড এবং ২.  দন্ডের মাথায় থলির ন্যায় পরাগধানী।

 

কাজ:

১. পরাগ রেণু তথা পুং জনন কোষ তৈরী করা।

২. পরাগ রেণুকে ছড়িয়ে দেয়া।

 

৫. স্ত্রী স্তবক: ফুলের পুং স্তবকের ভেতরের দিকে অবস্থিত পঞ্চম ও শেষ স্তবককে স্ত্রী স্তবক বলে। স্ত্রী স্তবকের প্রতিটি অংশকে গর্ভপত্র বলে। প্রতিটি গর্ভপত্র তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত, যথা- ১. নিচের সামান্য স্ফীত অংশ ডিম্বাশয় বা গর্ভাশয় ২. গর্ভাশয়ের উপরের সরু সুতার ন্যায় গর্ভদন্ড এবং ৩. গর্ভ দন্ডের উপরের অংশ গর্ভ মুন্ড।

 

কাজ:

১. ডিম্বানু তথা স্ত্রী জনন কোষ সৃষ্টি করা।

২. গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়।

          ফুলের স্তবক গুলোর মধ্যে পুং ও স্ত্রী স্তবক কে অত্যাবশ্যকীয় স্তবক এবং অন্যান্য স্তবক গুলোকে সাহায্যকারী স্তবক বলে।

        যদি কোনো ফুলের সবগুলো স্তবক থাকে তাকে তবে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। আর যে কোনো একটি স্তবক অনুপস্থিত থাকলে তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে।

         ফুলে যদি শুধু পুংস্তবক থাকে তকে তাকে পুরুষ ফুল বলে। আর যদি শুধু স্ত্রী স্তবক থাকে তবে তাকে স্ত্রী ফুল বলে। আর উভয় থাকলে তাকে উভলিঙ্গ ফুল বলে। সুতরাং সকল সম্পূর্ণ ফুলই উভলিঙ্গ ফুল।

 

পুষ্পমঞ্জরী: গাছের কোনো শীর্ষ মুকুল বা কাক্ষিক মুকুল হতে উৎপন্ন শাখার চতুর্দিকে ফুলগুলো একটি বিশেষ নিয়মে সাজানো থাকে। ফুল সহ পুরো শাখাটিকে পুষ্পমঞ্জরী বলে। পুষ্প মঞ্জরির বৃদ্ধি অসীম হলে তাকে অনিয়ত আর সসীম হলে তাকে নিয়ত পুষ্পমঞ্জরী বলে।

 

পরাগায়ন: পরাগধানী থেকে পরাগরেণুর স্ত্রী স্তবকের গর্ভমুন্ডে পতিত হবার প্রক্রিয়াকে পরাগায়ন বলে।

পরাগায়ন দুই প্রকার:

যথা:    ১. স্ব- পরাগায়ন       

২. পর- পরাগায়ন

 

পরাগায়নের মাধ্যম: যে বাহক পরাগরেণু বহন করে গর্ভমুন্ড পর্যন্ত নিয়ে যায় তাকে পরাগায়নের মাধ্যম বলে।

 

পরাগায়নের মাধ্যম অনুসারে ফুল চার প্রকার:

                        যথা-   ১. পতঙ্গপরাগী ফুল   ২. বায়ু পরাগী ফুল

                                    ৩. পানি পরাগী ফুল ৪. প্রাণী পরাগী ফুল।

 

নিষিক্তকরণ:  একটি পুং গ্যামেট ও একটি স্ত্রী গ্যামেটের পরিপূর্ণ ভাবে মিলিত হবার প্রক্রিয়াকে নিষিক্তকরণ বলে।

 

ফল: নিষিক্তকরণের পর ফুলের গর্ভাশয় এককভাবে অথবা ফুলের অন্যান্য অংশসহ পরিপুষ্ট হয়ে যে অঙ্গ গঠন করে তাকে ফল বলে।

 

অঙ্কুরোদগম: বীজ থেকে শিশু উদ্ভিদ জন্মানো প্রক্রিয়াকে অঙ্করোদগম বলে।

 অঙ্কুরোদগমকে প্রধাণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়: মৃদগত অঙ্কুরোদগম ও মৃদভেদী অঙ্কুরোদম।

বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩

লবণ নিয়ে কিছু কথা

অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দশম অধ্যায়ের নাম অম্ল, ক্ষারক ও লবণ। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এই অধ্যায়ে লবণ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা করা নেই। তবে শিক্ষার্থ ীদৈর জেনে রাখার জন্য লবণ নিয়ে আল্প কিছু গুরুত্বপূর্ণ  কথা নিম্নে দেওয়া হলো। আশাকরি শিক্ষার্থীরা এগুলো ভালোকরে নোট করে রপ্ত করবে। 

এসিড অংশের ক্লাস লেকচার দেখতে

ক্ষারক অংশের ক্লাস লেকচার দেখতে

 লবণ: রসায়ন শাস্ত্রে লবণ একটি বিশেষ শ্রেণীর যৌগিক পদার্থ। লবণের সজ্ঞা দিতে গিয়ে আমরা বলতে পারি,-

“ এসিড ও ক্ষারকের বিক্রিয়ার ফলে ক্ষারকের ধাতু এসিডের হাইড্রোজেনের স্থান দখল করে যে নতুন নিরপেক্ষ ধর্মী যৌগিক পদার্থ উৎপন্ন করে তাদেরকে লবণ বলে।” 

বা অন্য কথায় আমরা বলতে পারি-

 “ এসিডের প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু কোনো ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল মূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত হয়ে যে যৌগ গঠন  করে তাকে লবণ বলে।”

লবণের প্রকারভেদ:

যে কোনো লবণের রাসায়নিক নাম সে লবণ উৎপাদনকারী এসিড ও ক্ষারকের নাম থেকে নেয়া হয়। লবণের নামের প্রথম অংশে থাকে ধাতুর নাম এবং শেষ অংশে থাকে এসিড মূলকের নাম।

১. হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় উৎপন্ন লবণকে ক্লোরাইড লবণ বলে।

২. সালফিউরিক এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় উৎপন্ন লবণকে বলা হয় সালফেট লবণ।

৩. নাইট্রিক এসিডের লবণকে বলা হয় নাইট্রেট লবণ।

৪. কার্বনিক এসিডের লবণকে কার্বনেট লবণ বলা হয়।


অম্ল, ক্ষারক ও লবণ অধ্যায়ের ক্লাস লেকচার : পর্ব ২ ক্ষারক অংশ

অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দশম অধ্যায়ের নাম অম্ল, ক্ষারক ও লবণ। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। ই অধ্যায়ের ক্ষারক অংশের ক্লাস লেকচার নিম্নে দেওয়া হলো। আশাকরি শিক্ষার্থীরা এগুলো ভালোকরে নোট করে রপ্ত করবে। 

পর্ব ১ এর লিংক

ক্ষারক: এসিডের বিপরীতধর্মী পদার্থগুলোকে ক্ষারক বলে। ক্ষারকের সজ্ঞা দিতে গিয়ে আমরা বলতে পারি,-

“ ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রক্সাইড যা এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে ক্ষারক বলে।”



ক্ষার: যে সকল ক্ষারক পানিতে দ্রবীভূত হয় তাদেরকে ক্ষার বলে।


ক্ষারের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য:

১. ক্ষার পানিতে দ্রবণীয়।

২. ক্ষার জলীয় দ্রবণে হাইড্রক্সিল আয়ন দেয়।

৩. ক্ষারের জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে।

৪. ক্ষার ফেনোফথ্যালিন দ্রবণে গোলাপী বর্ণ ধারণ করে।

৫. ক্ষার মিথাইল অরেঞ্জ দ্রবণে হলুদ বর্ণ ধারণ করে।

৬. ক্ষার মিথাইল রেড দ্রবণে হলুদ বর্ণ ধারণ করে।

৭. ক্ষারের সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন হয়।

৮. অধিকাংশ ধাতব লবণের জলীয় দ্রবণে ক্ষার মিশালে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে এবং ধাতুর হাইড্রক্সাইডের অধঃক্ষেপ বা তলানি পড়ে।

৯. ক্ষারের জলীয় দ্রবণ সাবানের মত পিচ্ছিল।

১০. ক্ষারের জলীয় দ্রবণ বিদ্যুৎ পরিবাহী।

১১. ক্ষার সাধারণত কষা বা কটু স্বাদযুক্ত হয়।


ক্ষারকের ব্যবহার: ক্ষারকের নানাবিধ ব্যবহারের মধ্যে কতিপয় নিম্নে উল্লেখ করা হল-

১. পানি পরিস্কারক ব্লিচিং পাউডার তৈরীতে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ব্যবহার করা হয়।

২. ঘর-বাড়ি হোয়াইট ওয়াশ করতে  লাইম ওয়াটার ব্যবহার করা হয়।

৩. পোকমাকড় দমনে মিল্ক অফ লাইম ব্যবহার করা হয়।

৪. এন্টাসিড ঔষধ তৈরীতে মিল্ক অফ ম্যাগনেসিয়া ব্যবহার করা হয়।

৫. সাবান তৈরীতে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড ব্যবহার করা হয়।


সোমবার, ৩ জুলাই, ২০২৩

অম্ল, ক্ষারক ও লবণ অধ্যায়ের ক্লাস লেকচার : পর্ব ১ এসিড অংশ

 অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দশম অধ্যায়ের নাম অম্ল, ক্ষারক ও লবণ। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। ই অধ্যায়ের অম্ল বা এসিড অংশের ক্লাস লেকচার নিম্নে দেওয়া হলো। আশাকরি শিক্ষার্থীরা এগুলো ভালোকরে নোট করে রপ্ত করবে। 

পর্ব ২ এর লিংক

অম্ল বা এসিড: অম্লের ইংরেজি প্রতিশব্দ এসিড। টক স্বাদযুক্ত সব বস্তুর মধ্যেই এসিড থাকে। এসিডের সজ্ঞা দিতে গিয়ে আমরা বলতে পারি-“ যদি কোনো যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা এসিড বলে।”


এসিডের ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য:

১. এসিডের অণুতে প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে।

২. ধাতু বা ধাতুর ন্যায় ক্রিয়াশীল যৌগমূলক দ্বারা হাইড্রোজেন প্রতিস্থাপিত হয়ে লবণ উৎপন্ন করে।

৩. এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে।

৪. এসিড ফেনোফথ্যালিন দ্রবণে বর্ণহীন হয়ে যায়।

৫. এসিড মিথাইল অরেঞ্জ দ্রবণে লাল বর্ণ ধারণ করে।

৬. এসিড মিথাইল রেড দ্রবণে লাল বর্ণ ধারণ করে।

৭. এসিডের সাথে ক্ষারকের বিক্রিয়ায় লবণ ও পানি উৎপন্ন হয়।

৮. এসিড সাধারণত টক স্বাদযুক্ত হয়।

৯. এসিড কার্বনেটযুক্ত লবণের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।


জৈব এসিড: ফলমূল বা শাকসবজিতে যে সকল এসিড থাকে তাদেরকে জৈব এসিড বলে।

মহাকাশ ও কৃত্রিম উপগ্রহ অধ্যায়ের ক্লাসলেকচার

খনিজ এসিড: প্রকৃতিতে প্রাপ্ত নানারকম খনিজ পদার্থ থেকে যে সকল এসিড তৈরী করা হয় তাদেরকে খনিজ এসিড বলে।


এসিডের ব্যবহার: মানব জীবনে এসিডের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু নিম্নে দেয়া হল।

১. জৈব এসিড আমাদের দেহের জন্য খুবই দরকারি। এগুলোর মধ্যে এসকরবিক এসিড বা ভিটামিন সি এর অভাবে আমাদের স্কার্ভি নামক রোগ হতে পারে।

২. বিভিন্না প্রকার সার যেমন ইউরিয়া, পটাশ, ফসফেট প্রভৃতি তৈরীতে খনিজ শিল্প কারখানায় খনিজ এসিড ব্যবহার করা হয়।

৩. টয়লেট পরিস্কারক তৈরীতে এসিড ব্যবহৃত হয়।

৪. গহনা তৈরীতে স্বর্ণকাররা নাইট্রিক এসিড ব্যবহার করে।

৫. ব্যাটারি তৈরীতে সালফিউরিক এসিড ব্যবহার করা হয়।

৬. সাপের উপদ্রব কমাতে কার্বোলিক এসিড ব্যবহার করা হয়।

৭. খাবার হজমের জন্য আমাদের পাকস্থলিতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড তৈরী হয়।

৮. ডিটারজেন্ট, রং, কীটনাশক ও কাগজ শিল্পে সালফিউরিক এসিড ব্যবহার করা হয়।

৯. বিস্ফোরক প্রস্তুতি, খনি থেকে ধাতু আহরণ ও রকেটে জ্বালনির সাথে নাইট্রিক এসিড ব্যবহৃত হয়।


মহাকাশ ও উপগ্রহ অধ্যায়ের ক্লাস লেকচার

 অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের দ্বাদশ অধ্যায় মহাকাশ ও উপগ্রহ এর গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা সমূহ নিম্নে প্রদান করা হলো। আশাকরি শিক্ষার্থীরা বাসায় নোট করে এ সংজ্ঞা গুলো আত্মস্থ করবে।



গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা সমূহ:

মহাবিশ্ব: ভৌত জগতে যা কিছু আছে তার সবকিছু মিলে যে জগত তাকে মহাবিশ্ব বলে।

নভোমণ্ডলিয় বস্তু: মহাবিশ্ব যে সকল বস্তুপিণ্ড দিয়ে গঠিত তাকে নভোমণ্ডলিয় বস্ত বলে।

মহাকাশ: নভোমণ্ডলিয় বস্তু সমূহ যে সিমাহীন ফাঁকা জায়াগায় অবস্থিত থাকে তাকে মহাকাশ বলে। অর্থাৎ মহাকাশ বলতে পদার্থের অনুপস্থিতিকে বোঝায়।

নক্ষত্র: যেসকল নভোমণ্ডলিয় বস্তুর নিজস্ব আলো ও উত্তাপ রয়েছে তাদেরকে নক্ষত্র বলে। সূর্য এমন একটি নক্ষত্র।

গ্রহ: যেসকল নভোমণ্ডলিয় বস্তুর নিজস্ব আলো ও উত্তাপ নেই এবং যারা কোনো নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে একটি সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে তাদেরকে গ্রহ বলে। পৃথিবী একটি গ্রহ।

উপগ্রহ: যেসকল নভোমণ্ডলিয় বস্তু কোনো গ্রহকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে তাদেরকে উপগ্রহ বলে।

গ্যালাক্সি: কয়েক হাজার কোটি গ্রহ, নক্ষত্রের একটি বৃহৎ সমাবেশ যা মহাকাশে গুচ্ছ আকারে অবস্থান করে তাকে গ্যালাক্সি বলে। সূর্য যে গ্যালাক্সির অন্তর্গত তার নাম মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথ।

আলোকবর্ষ: আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে এক আলোকবর্ষ বলে। মনে রাখতে হবে আলোকবর্ষ দূরত্ব পরিমাপের একক, সময় পরিমাপের নয়।

মহাবিস্ফোরণ তত্ব: মহাবস্ফিোরণ তত্ত্ব মহাবশ্বিরে উৎপত্তি সর্ম্পকে প্রদত্ত একটি বজ্ঞৈানকি তত্ত্ব। এই তত্ত্বরে অন্যতম বশৈষ্ট্যি হলো কোন ধারাবাহকি প্রক্রযি়ার পরর্বিতে একটি বিশেষ মুর্হূতে মহাবশ্বিরে উদ্ভব। এই তত্ত্ব বলে আজ থকেে প্রায় ১৩.৭ বিলিয়ন বছর র্পূবে এই মহাবশ্বি একটি অতি ঘন এবং উত্তপ্ত অবস্থা থকেে সৃষ্টি হয়েছিল। বিজ্ঞানী এডুইন হাবল প্রথম বলনে, দূরর্বতী ছায়াপথসমূহের বেগ সামগ্রকিভাবে র্পযালোচনা করলে দখো যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে র্অথাৎ মহাবশ্বি ক্রমশ সম্প্রসারতি হচ্ছ। এই তত্ত্বসমূহের সাহায্যে অতীত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমগ্র মহাবশ্বি একটি সুপ্রাচীন বিন্দু অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করছে। এই অবস্থায় সকল পর্দাথ এবং শক্তি অতি উত্তপ্ত এবং ঘন অবস্থায় ছিল। এর পর এক বিস্ফোরণের মাধ্যমে প্রথমে শক্তি ও পরে পর্দাথ উৎপন্ন হযে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং মহার্কষ বলের প্রভাবে র্পযায়ক্রমে ঘনীভূত হয়ে নক্ষত্র, গ্রহ ও উপগ্রহের সমন্বয়ে এই মহাবশ্বি গঠিত হয়।

কৃত্রিম উপগ্রহ: মানুষ নির্মিত যে সকল যন্ত্র বা মহাকাশ যান পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করে তাকে কৃত্রিম উপগ্রহ বলে।

ভূস্থির উপগ্রহ: যদি কোনো উপগ্রহের আবর্তনকাল পৃথিবীর আহ্নিক গতির সমান হয় তবে একে পৃথিবী থেকে স্থির বলে মনে হবে। তখন এ ধরণের উপগ্রকে ভূস্থির উপগ্রহ বলে।


রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩

ডিএনএ এর গঠন

DNA একপ্রকার নিউক্লিক অ্যাসিড। এটি সজীব বস্তুর একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান যা জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য এক জনু থেকে অপর জনুতে এবং এক কোষ থেকে অন্য কোষে বহন করে। DNA সজীব বস্তুর যাবতীয় জৈবিক ক্রিয়াকলাপগুলো নিয়ন্ত্রণ করে; এক কথায় DNA হলো জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের প্রকৃত ধারক ও বাহক। DNA প্রধানত ক্রোমোসোমেই থাকে, তবে মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড, সেন্ট্রোসোম প্রভৃতি কোষীয় অঙ্গাণুর মধ্যে এমনকি সাইটোপ্লাজমের মধ্যে কিছু পরিমাণ DNA পাওয়া যায়।

DNA-এর সংজ্ঞা: সজীব কোষে অবস্থিত স্বপ্রজননশীল, পরিব্যক্তিক্ষম, সকল প্রকার জৈবিক কার্যের নিয়ন্ত্রক এবং বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক যে নিউক্লিক অ্যাসিড তাকে DNA বলে ।



ওয়াটস ও ক্রিক

DNA এর ভৌত গঠন (Physical structure of DNA):

DNA এর ভৌত গঠন সম্পর্কে ওয়াটসন ও ক্রিক ১৯৫৩ সালে একটি মডেল প্রদান করেন। এটি হলো DNA ডাবল হেলিক্স মডেল এবং এ মডেল প্রস্তাবের জন্য তাঁরা ১৯৬৩ সালে আরেক বিজ্ঞানী, উইলকিন্স-সহ নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

ওয়াটসন ও ক্রিক প্রদত্ত DNA অণুর গঠনশৈলী:

১৯৫৩ সালে বিজ্ঞানী ওয়াটসন ও ক্রিক DNA অণুর প্রতিকৃতির যে নক্সা (model) প্রণয়ন করেন, তার বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ।

DNA-র রাসায়নিক গঠন (Chemical structure of DNA)

DNA এক ধরনের রাসায়নিক জৈব যৌগ। এটি নিম্নলিখিত রাসায়নিক উপাদান সমন্বয়ে গঠিত-

ডিএনএ এর রাসায়নিক গঠন

i. একটি পেন্টোজ শর্করা (Pentose sugar) হিসেবে ডি-অক্সিরাইবোজ (deoxyribose)।

ii. একটি ফসফোরিক অ্যাসিড (Phosphoric acid) তথা ফসফেট গ্রুপ। এবং

iii. নাইট্রোজেন বেস (Nitrogen base) : DNA অণুতে দু'রকম নাইট্রোজেন বেস থাকে, যথা- পাইরিমিডিন এবং পিউরিন

(a) পাইরিমিডিনএটি একটি 'রিং নিয়ে গঠিত। DNA অণুতে সাইটোসিন এবং থাইমিন নামক দু'প্রকারের পাইরিমিডিন থাকে।

(b) পিউরিন-এটি দু'টি রিং নিয়ে গঠিত। DNA অণুতে অ্যাডেনিন ও গুয়ানিন নামক দু'প্রকার পিউরিন থাকে।

পিউরিন ও পাইরিমিডিন বেস ডি-অক্সিরাইবোজের সঙ্গে রাসায়নিক লিংকেজ গঠন করে থাকে, যাকে নিউক্লিওসাইড বলে। নিউক্লিওসাইড ফসফোরিক অ্যাসিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিউক্লিওটাইড গঠন করে। নিউক্লিওটাইড হলো DNA অণুর মূল কাঠামো। DNA অণুকে রাসায়নিক গুণগতভাবে নিউক্লিওটাইডের পলিমার বা পলিনিউক্লিওটাইড বলে।

DNA-র ভৌত গঠন (Physical structure of DNA)

১। দুটি বিপরীতমুখী পলিনিউক্লিওটাইড সূত্র পরস্পরের সাথে লোহার সিঁড়ির মতো ডানদিকে প্যাচানো আকৃতি ধারণ করে এবং একটি জোড় কুণ্ডলী বা ডাবল হেলিক্স (double helix) গঠন করে। এ সিঁড়ির দুদিকের হাতল নির্মিত হয় ডি-অক্সিরাইবোজ সুগার (S) ও ফসফেট (P) এর পর্যায়ক্রমিক সংযুক্তির মাধ্যমে এবং ধাপগুলো দুটি নাইট্রোজেন বেস (A = T, C = G) দিয়ে গঠিত।

ডিএনএ এর ভৌত গঠন
২। একটি নিউক্লিওটাইডের সুগারের ৫ম কার্বন অণুর সাথে ফসফেট যুক্ত থাকলে অপর নিউক্লিওটাইডের সুগারের ৩য় কার্বন অণুর সাথে ফসফেট যুক্ত হয়। নাইট্রোজেন বেসটি সবসময় সুগারের ১ম কার্বনের সাথে যুক্ত থাকে।

৩। সিঁড়ির মতো প্যাচানো সূত্রদুটি একটি কাল্পনিক মধ্য অক্ষকে ঘিরে থাকে। সূত্রদুটি পরস্পরের সমান্তরালে কিন্তু বিপরীতমুখী হয়ে অবস্থান করে। অর্থাৎ একটি সূত্র ৫′→ মুখী এবং অন্যটি ৩′→ কার্বনমুখী অবস্থানে থাকে।

৪। বেসগুলো হাইড্রোজেন বন্ড দিয়ে যুক্ত হয়। কাজেই সিঁড়ির বাইরের দিকে থাকে ফসফেট এবং ভেতরের দিকে থাকে নাইট্রোজেন বেস। একটি সূত্রের গুয়ানিন অপর সূত্রের সাইটোসিনের সাথে তিনটি হাইড্রোজেন বন্ড দিয়ে যুক্ত হয় (GC) এবং একটি সূত্রের অ্যাডেনিন অপর সূত্রের থাইমিনের সাথে দুটি হাইড্রোজেন বড্ড দিয়ে সংযুক্ত থাকে (A=T)।

৫। হেলিক্সের ব্যাস ২০Å। দৈর্ঘ্য বিভিন্ন হতে পারে।

৬। একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাচ প্রতি ৩৪Å দূরত্বে সম্পন্ন হয়। প্যাচটি হয় ডান থেকে বাঁদিকে। দশ নিউক্লিওটাইড জোড়ের পর একেকটি প্যাঁচ সম্পন্ন হয়। প্রতি প্যাঁচে থাকে প্রায় ২৫টি হাইড্রোজেন বন্ড ।

৭। বেস জোড়গুলো পরস্পর থেকে ৩.৪Å (৩৪Å ÷১০=৩.৪Å) দূরত্বে অবস্থিত।

 

বেন্থাম ও হুকারের প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস

জর্জ বেন্থাম (১৮০০-১৮৮৪) ও যোসেফ ড্যালটন হুকার (১৮১৭-১৯১১) একত্রে প্রায় ৪০ বছর লন্ডন শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত কিউ উদ্যানে গবেষণা করেন। তাঁরা ১৮...