অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তোমাদের সুবিধার জন্য রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায়ের ক্লাসলেকচার দেওয়া হলো। এখান থেকে এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞাগুলো তোমারা জানতে পারবে। তবে অধ্যায়টি ভালো ভাবে জানতে ও বুঝতে এই অধ্যায়ের যে ভিডিও ক্লাসগুলো দেওয়া হলো তা অবশ্যই ভালোভাবে দেখবে ও অনুশীলন করবে। তাহলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ভিতি তোমাদের আর থাকবেনা বলেই আমার বিশ্বাস। কারো কোনো সমস্যা থাকলে আমার জানাতে পারো।
মৌলিক পদার্থ:
যে সকল পদার্থকে রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে কেবল মাত্র একটি পদার্থই পাওয়া যায় তাদেরকে মৌলিক পদার্থ বলে। যেমন: অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, লোহা, সোনা ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত ১১৮ টি মৌল আবিস্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে ৯৮ টি প্রকৃতিতে পাওয়া যায় আর বাকিগুলো গবেষণাগারে কৃত্রিম উপায়ে তৈরী করা হয়েছে।
যৌগিক পদার্থ:
যে সকল পদার্থকে রাসায়নিক উপায়ে বিশ্লেষণ করলে একাধিক মৌলিক পদার্থ পাওয়া যায়, তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলে। যেমন: পানি, মিথেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি।
প্রতীক:
কোনো মৌলের পুরো নামের সংক্ষিপ্ত রূপকে ঐ মৌলের প্রতীক বলে। প্রতীক দ্বারা মৌলিক পদার্থের একটি পরমাণুকে বোঝায়।
সংকেত:
মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের অণুর সংক্ষিপ্ত রূপকে ঐ পদার্থের সংকেত বলে।
যৌগমূলক:
একাধিক মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত পরমাণু গুচ্ছ, যারা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অপরিবর্তিত থেকে একটিমাত্র পরমাণুর ন্যায় আচরণ করে, তাদেরকে যৌগমূলক বলে।
যোজনী:
কোনো মৌলিক পদার্থের একটি পরমাণু তার নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয়গ্যাসের ইলেকট্রন কাঠামো অর্জনের জন্য যতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ, বর্জন বা শেয়ার করে সেই সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজনী বলে।
রাসায়নিক
বিক্রিয়া:
যে প্রক্রিয়ায় এক বা একধিক পদার্থ পরস্পরের সাথে যুক্ত বা বিযুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্ম বিশিষ্ট নতুন এক বা একাধিক পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে।
রাসায়নিক
সমীকরণ:
কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক দ্রব্য এবং উৎপন্ন দ্র্ব্যকে কতিপয় প্রতীক, সংকেত ও চিহ্নের মাধ্যমে সংক্ষেপে প্রকাশ করাকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে।
বিক্রিয়ক:
যে সকল পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাদের কে বিক্রিয়ক বলে।
উৎপাদ:
যে সকল পদার্থ রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয় তাদের কে উৎপাদ বলে।
সংযোজন বিক্রিয়া:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক বা যৌগিক পদার্থ পরস্পর বিক্রিয়া করে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংযোজন বিক্রিয়া বলে। তবে যে সংযোজন বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ যুক্ত হয়ে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলে।
বিযোজন বিক্রিয়া:
যে বিক্রিয়ায় একটি যৌগ বিভক্ত হয়ে দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগে পরিণত হয় তাকে বিয়োজন বিক্রিয়া বলে। এটি সংযোজন বিক্রিয়ার বিপরীত বিক্রিয়া। তবে যে বিযোজন বিক্রিয়ায় একটি যৌগিক পদার্থ ভেঙে দুই বা ততোধিক মৌলে পরিণত হয় তাকে বিশ্লেষন বিক্রিয়া বলে।
প্রতিস্থাপন
বিক্রিয়া:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি মৌল অন্য যৌগের অণুর এক বা একাধিক পরমাণুকে সরিয়ে নিজেই তার স্থান দখল করে নতুন যৌগ উৎপন্ন করে সে বিক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে।
দ্বিবিযোজন
বা বিনিময় বিক্রিয়া:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় দুইটি ভিন্ন যৌগের অণুর মৌল বা মূলকগুলো স্থান অদল বদল বা বিনিময় করে একাধিক নতুন অণু গঠন করে তাকে বলা হয় পারস্পরিক দ্বিবিয়োজন বা বিনিময় বিক্রিয়া।
প্রশমন বিক্রিয়া:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় একটি এসিড ও একটি ক্ষারক পরস্পর বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে।
দহন বিক্রিয়া:
যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বায়ু বা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে কোনো পদার্থে অগ্নিসংযোগ করলে
তা ভিন্ন কোনো পদার্থে পরিণত হয় তাকে দহন বিক্রিয়া বলে।
কুইক লাইম:
ক্যালসিয়াম অক্সাইড কে কুইক লাইম বলে।
লাইম ওয়াটার:
কুইক লাইমের সম্পৃক্ত দ্রবণকে লাইম ওয়াটার বলে।
তড়িৎ বিশ্লেষ্য:
যে সকল পদার্থ শুষ্ক অবস্থায় তড়িৎপরিবহন না করলেও গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে ফলে তার ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে তাদের কে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে।
তড়িৎ বিশ্লষণ:
কোনো গলিত বা দ্রবীভূত
তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করে তার ভৌত বা রাসায়নিক পরিবর্তন
ঘটানোর প্রক্রিয়াকে তড়িৎবিশ্লেষণ বলে।