বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১৮

আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য


আমরা সবাই আকর্ষনীয় হতে চাই। ব্যক্তিত্বশীল হতে চাই। চাই সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হতে। চাই সবাইকে আকৃষ্ট করতে। নিজেকে অসাধারণ হিসেবে উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই আমাদের জানা উচিত ঠিক কি কি বৈশিষ্ট্য একজন ব্যক্তিকে আকর্ষনীয় ও অসাধারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। আমি নিজে যে যে বৈশিষ্ট্যগুলো একজন অসাধারণ মানুষের মাঝে দেখতে চাই তার একটা তালিকা নিচে দিলাম।

১. আত্মনিয়ণ্ত্রিত: একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তিকে অবশ্যই আত্মনিয়ন্ত্রিত হতে হবে। সে তার আবেগ কে প্রধান্য দিবেনা। সে সর্বদা তার মস্তিষ্ক দ্বারা চালিত হবে। কাজের ক্ষেত্রে বাস্তবতা আর যৌক্তিকতার প্রাধাণ্য থাকবে। সে কখনই আবেগ দিয়ে চালিত হবেনা। নিজের লক্ষ্য ও সিদ্ধান্ত নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেক, বুদ্ধি, যুক্তি আর বাস্তবতাকে সর্বদা বিবেচনা করবে।

২. স্ব-অনুপ্রাণিত: সে কাজ করতে করতে হঠাৎ হতোদ্যম হবেনা। ব্যর্থ হলেও হতাশ হয়ে পড়বেনা। সে সর্বদা নিজেই নিজেকে অনুপ্রাণিত করবে। সে তার ব্যর্থতা থেকে, পরাজয় থেকে শিক্ষা নিবে। এবং সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে সফল হবার জন্য আবার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে।

৩. সময়নিষ্ঠতা: একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তি জানে সময়ের মূল্য এবং গুরুত্ব কতটা। তাই সে সর্বদা সময়নিষ্ঠ থাকে। সে কখনই তার সাক্ষাতের সময় বা অনুষ্ঠানে বা কাজে দেরি করেনা। সে কোথাও পৌছাতে গেলে রাস্তার কথা বা পরিবেশের কথা মাথায় রেখে বেরোয়। তাই যানজট, ঘুম থেকে উঠতে না পারা বা অন্য কোনো কিছুর অযুহাত তৈরি করেনা। সে সর্বদা সময়ের কাজ সময়ে করে। কাজ পরে করবে বলে ফেলে রাখেনা।

৪. সততা: আকর্ষনীয় ব্যক্তিকে অবশ্যই সৎ হতে হবে। সে উচ্চাকাঙ্খী হবে। তার কাজকে সফল করতে চাইবে। তবে তা সবসময় সৎ থেকে করবে। কাজের ক্ষেত্রে বা যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে সে অবশ্যই সৎ থাকবে। সে তার অংশীদারকে কখনোই ধোঁকা দিবেনা। দেশের বিদ্যমান আইন ও নৈতিকতার প্রতি সে শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

৫. অসাম্প্রদায়িকতা: অসাম্প্রদায়িকতা বলতে সকল সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতাকে বোঝায়। একজন আকর্ষীয় ব্যক্তি অবশ্যই অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতের প্রতি, আচরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। সে কখনোই সম্প্রদায়ের বিচারে মানুষকে বিচার করবেনা। বিচার করবে তার কর্ম, নীতি, নৈতিকতা, মূল্যবোধ দিয়ে।

৬. প্রেমময়: পৃথিবীর সকল জীব প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ। আমাদের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী, সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর সাথে আমাদের রয়েছে প্রেমের সম্পর্ক। একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তিও প্রেমময় হবে। সে তার পরিবারের সদস্য, বন্ধু, প্রতিবেশীদের ভালোবাসবে।সে পরোপকারী হবে। রাস্তার প্রাণী ও উদ্ভিদও তার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবেনা। প্রাণীদেরকে ভালোবাসতে না পারুক অন্তত তাদের প্রতি নির্দয় নিষ্ঠুর হবেনা। অকারণে গাছের ফুল-ফল ছিড়বেনা বা রাস্তার কুকুরকে ঢিল ছুড়বেনা বা হত্যা করবেনা।

৭. মৌলবাদীতা: মৌলবাদ বলতে নিজের মতে একেবারে স্থির বা অনড় অবস্থাকে বোঝায়। সে কখনই মৌলবাদী হবেনা। তার নিজের মতের প্রতি সে স্থির থাকবে, ঠিকাছে। কিন্তু অন্যের মতও সে অনুধাবন করবে। তারপর তার যদি মনেহয় যে তা মতের থেকে অন্যের মত উত্তম তবে সে নিজের মত বাদ দিয়ে অন্যের মত গ্রহণ করবে। এতে সে লজ্জিত বা কুন্ঠিত হবেনা।

৮. ভুল স্বীকার করা: একজন উত্তম ব্যক্তি নিজের কাজের দায়িত্ব নিজেই নেয়। তার ভুল হলে সে স্বীকার করে তা থেকে উত্তরণের জন্য ভাবে। নিজের ভুলের জন্য অন্যকে দোষারোপ করেনা বা কোনো ধরণের অযুহাত তৈরী করেনা।

৯. সবসময় শেখে: শেখার কোনো শেষ নেই। একজন আকর্ষনীয় উত্তম ব্যক্তি সর্বদা নিজেকে শেখার মধ্যে রাখে। সে নিয়মিত বই, ম্যাগাজিন, পত্রিকা বা জার্নাল পড়ে এবং নিজেকে সর্বদা কালের উপযোগী রাখে। কোনো নতুন কিছু শেখার প্রতি তার আগ্রহে কখনোই ঘাটতি থাকেনা।

১০. নিরহংকারী: আকর্ষনীয় ব্যক্তিকে অবশ্যই নিরহংকারী এবং বিনয়ী হতে হবে। সে তার সম্মন এবং সাফল্যকে উপভোগ করবে। কিন্তু এ নিয়ে কখনই বড়াই বা অহংকার করবেনা। সে এ কথা ধারণ করে, যে “অহংকার পতনের মূল”।

১১. রাজনৈতিক ভাবে সচেতন: রাজনীতি আমাদের জীবনের মৌলিক চাহিদা থেকে শুরু করে প্রায় সকল কিছু নিয়ণ্ত্রণ করে। তাই একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তিকে রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হতে হবে। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সে তার অধিকার, দায়িত্ব, কর্তব্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেত থাকবে।

১২. শরীরের প্রতি যত্নশীল: একজন মানুষের প্রধান সম্পদ তার শরীর। “স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল”-একথা সকলেই জানে। তাই একজন উত্তম ব্যক্তি নিজের শরীরের যত্ন নেয়। ঠিকমত গোসল করে, দাঁত, নখ, চুল ও ত্বকের পরিচর্যা করে নিয়মিত। নিয়মিত ব্যায়াম করে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খায়।

১৩. পোশাক পরিচ্ছদ: একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তি পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারেও দারুন সচেতন থাকে। সে মানানসই, রুচিশীল এবং পরিস্কার পোশাক পড়ে এবং ড্রেস কোড মেনে চলে।

আপাতত এগুলোই আমার মাথায় এলো। আরো অনেক বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে যা আমি হয়ত বাদ দিয়ে গেছি। আপনারা চাইলে আপনাদের কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে মন্তব্যর ঘরে উল্লেখ করতে পারেন। দ্বিমত বা প্রতিমত থাকলেও অবশ্যই জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবম শ্রেণি: বিজ্ঞান বই: নবম অধ্যায়: জৈব অণু অধ্যায়ের নোট (পর্ব:০১)

জৈব অণু অধ্যায়ের মূলকথা সজীব কোষ অসংখ্য অণু দিয়ে গঠিত। এই অণুগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র অণু এবং বৃহৎ অণু যেগুলো একত্রে জৈব অণু বলে পরিচিত। ...